বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:১৩ পূর্বাহ্ন
ফজলুল করিম ফারাজী, কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামে শখের বসে ড্রাগন চাষ করে বাণিজ্যিক চাষাবাদের স্বপ্ন দেখছেন খোরশেদ আলম নামের এক ড্রাগন ফলচাষি।শুরুতে ৩০ টি গাছ থেকে এখন তার বাগানে ২ হাজারের বেশি ড্রাগন গাছ।বছরে লক্ষাধিক টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করেন তিনি। খোরশেদ আলম কুড়িগ্রাম পৌর শহরের রিভারভিউ উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন পুরাতন হাসপাতালপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী দবির উদ্দিনের ছেলে।নিজের অনান্য ব্যবসার পাশাপাশি ইউটিউবে ড্রাগন চাষ পদ্ধতি দেখে উদ্যোগ নেন ড্রাগন চাষ করার। পরে দীর্ঘ প্রতিক্ষা আর চেষ্টায় আজ ড্রাগন ফল চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।’
ড্রাগনচাষি খোরশেদ আলমের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, থাইল্যান্ড বেড়াতে গিয়ে ড্রাগন ফলের বাগান দেখেন। সেখান থেকে ড্রাগনের কাটিং এনে প্রথমে ছাদে একটি ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করেন। দেড় বছর পর ফুল ফল দেখে উদ্বুধ হন তিনি। পরবর্তীতে বিভিন্ন জায়গা থেকে ৩০টি ড্রাগনের চারা এনে নিজের জমিতে রোপণ করেন।এখন তার ৫০ শতক জমিতে ২ হাজারের বেশী ড্রাগন ফলের গাছ রয়েছে।’
প্রতিটি চারাগাছে ১০০ টাকা খরচে সব মিলে এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে তার ২ লাখ টাকা। দীর্ঘ মেয়াদি এ প্রজেক্ট থেকে এখন পর্যন্ত লাখ টাকা আয় করেছেন তিনি। খোরশেদ আলমের ড্রাগন চাষ দেখে কুড়িগ্রামে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে জেলায় বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফল চাষে এগিয়ে আসছেন অনেকেই।ড্রাগন গাছ
ড্রাগনচাষি খোরশেদ আলম দৈনিক প্রলয়কে বলেন, ড্রাগন ফল দীর্ঘমেয়াদি আবাদ। এটি একটি লাভজনক চাষাবাদ। প্রথমে একটু খরচ হলেও পরবর্তীতে খরচ তেমন নেই। অনান্য আবাদে যেমন সবসময় গাছের যত্ন, সার ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়, সেদিক থেকে ড্রাগন চাষাবাদ খুবই ভালো। সামান্য পরিচর্যা করতে পারলে ড্রাগন ফল চাষ করা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, আমি প্রথমে ইউটিউব থেকে ড্রাগন ফল চাষে দেখে উদ্বুদ্ধ হই। পরবর্তীতে একটি গাছ লাগাই। তারপর ৩০টি গাছ এনে স্বল্প পরিসরে চাষাবাদ শুরু করি। বাগানের বয়স ৫ বছর। বর্তমানে ৫০ শতক জমি জুড়ে ড্রাগন ফলের বাগান। এখানে গাছের সংখ্যা ২ হাজারের বেশি।বছরে প্রায় ২/৩ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করা হয়।
পরিচর্যায় নিয়োজিত রিপন দৈনিক প্রলয়কে বলেন, ড্রাগন চাষে তেমন কোনো পরিচর্যার দরকার হয় না। ফুল আসার এক মাসের মধ্যে ফল ধরে। এখানে তিন জাতের ড্রাগন ফলের গাছ আছে। এখানে চায়না ও ভিয়েতনাম পদ্ধতিতে ড্রাগনের গাছের চারা লাগানো হয়েছে। গত বছর প্রায় তিন লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করেছি।এ বছর আবহাওয়া ভালো না থাকায় ফলন একটু কম হয়েছে। আগামী বছর ভালো কিছু আশা করছি।’
ড্রাগন বাগান দেখতে আসা মোঃ ইমরান দৈনিক প্রলয়কে বলেন,আমরা বাজার থেকে ড্রাগন ফল কিনি।এই প্রথম বাগান দেখতে এসে খোরশেদ আলম ভাইয়ের কাছ থেকে ড্রাগন ফল কিনলাম।এটা খুবই ভালো উদ্যোগ দেশের কৃষি বিভাগ যদি পূর্ণ সহযোগিতা করে তাহলে আমাদের মত বেকার যুবকরা ড্রাগন ফল চাষ করে আত্মকর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবে।’
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাহিদা আফরিন দৈনিক প্রলয়কে বলেন, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ৪টি ড্রাগন ফলের বাগান আছে। ১৫০-২০০শ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ড্রাগন ফল। তবে কুড়িগ্রামের মানুষ ড্রাগন ফলের ওপর বেশি অভ্যস্ত না। অনান্য জেলায় ড্রাগন ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।’